চান্দিনা মহিলা কলেজে পাঁচ দফা দাবি সহ উপাধ্যক্ষ ও প্রভাষকের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রীদের আন্দোলন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

এটিএম মাজহারুল ইসলাম(কুমিল্লা)।।
স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং (বৃহস্পতিবার) বেলা ১২ ঘটিকার সময় কুমিল্লার চান্দিনা মহিলা কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রীদের সমন্বয়ে পাঁচ দফা দাবি ও মৌখিক কয়েকটি দাবীতে আবারো শুরু হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রীদের আন্দোলন।

ছাত্রীদের আন্দোলন চলমান অবস্থায় চান্দিনা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত পাঁচ দফা দাবি ও অলিখিত দাবিগুলো পেশ করেন চান্দিনা মহিলা কলেজ শাখার বৈষম্য বিরোধী ছাত্রী আন্দোলনের ছাত্রীরা। লিখিত পাঁচ দফার দাবিগুলো হলো- (১) ২০১৬ সালে জাতীয়করণ বহালের দাবিতে কাঠেরপুল এলাকায় ছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের নামধারী নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় ও তত্ত্বাবধানে তথাকথিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মানবতাবিরোধী বর্বরোচিত হামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ন্যায়বিচার চাই। (২) কলেজ ক্যাম্পাসকে সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত করে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল করতে হবে। (৩) বিভিন্ন বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে গিরগিটির মত রং বদলকারী সন্ত্রাসীদের সাথে কলেজ ও আশেপাশে বৈঠক নিষিদ্ধ করতে হবে। (৪) ছাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান ও বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ করে দিতে হবে। (৫) কলেজ পরিচালনা পর্ষদের পুরাতন কমিটি বাতিল করে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা পুনঃগঠন করতে হবে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্রীদের মৌখিক দাবীগুলোর মধ্যে প্রধান দাবি হলো- চান্দিনা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান সহ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আবু হানিফ, যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক আঃ রাজ্জাক রাজু এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের প্রভাষক কাজী রুজিনার পদত্যাগ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রী আন্দোলনের এক ছাত্রী বলেন, আজ সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। উপাধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামান সহ যে সকল প্রভাষকের পদত্যাগের দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন, তাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

আন্দোলনের সূত্র থেকে জানা যায়, সরকার কর্তৃক গত ০৩ জুলাই ২০১৬ইং সালে দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে কলেজ জাতীয়করণের প্রকাশিত তালিকায় ১৯৯টি কলেজের মধ্যে কুমিল্লার চান্দিনা মহিলা কলেজের নামও অন্তর্ভূক্ত ছিলো। কিন্তু চান্দিনা মহিলা কলেজকে জাতীয়করণ না করে দোল্লাই নবাবপুর কলেজকে জাতীয়করণ করেন চান্দিনা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ। জাতীয়করণের সূত্র ধরেই শুরু হয় চান্দিনা মহিলা কলেজে ছাত্রীদের আন্দোলন।

গত ২৪ জুলাই ২০১৬ইং সালে জাতীয়করণ পুনর্বহাল আন্দোলনের ৬ষ্ঠ দিনে যখন ছাত্রীরা শান্তিপুর্ণ মিছিল নিয়ে কাঠেরপুল হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাওয়ার পর ছাত্রীদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডাররাও ছাত্রীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঐ হামলার ঘটনায় প্রায় ২৫ জন ছাত্রী আহত হয় এবং ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক ছিলো। আহত ছাত্রীদেরকে মধ্যে ১৩ জনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মুমুর্ষ অবস্থায় ৩ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয় এবং বাকী ৯ জন বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।

চান্দিনা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ কামরুজ্জামানের নিকট পদত্যাগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কোন কিছুই বলতে চাইনা। আপনারা যা জানতে চান অধ্যক্ষের নিকট থেকে জানতে পারেন।

পরবর্তীতে চান্দিনা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মামুন পারভেজের নিকট ছাত্রীদের আন্দোলনের লিখিত দাবীগুলো সহ উপধ্যক্ষ ও প্রভাষকদের পদত্যাগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগে উপধ্যক্ষ ও প্রভাষকদের পদত্যাগের বিষয়টি নাই। তাদের লিখিত অভিযোগের মধ্যে ছিলো, চান্দিনা মহিলা কলেজ জাতীয়করণ ও কলেজ সংস্কারকরণ। শিক্ষকদের পদত্যাগ ব্যাতীত ছাত্রীদের পাঁচ দফা দাবি কলেজের সভাপতি ও গভর্নিং বডির সাথে সিদ্ধান্তের সমন্বয়ে মেনে নেয়া হবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
Scroll to Top