জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি।।
ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মুছাপুর রেগুলেটর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। উপায়ন্ত না দেখে ছোট ফেনী নদীর ভাঙন ঠেকাতে সোনাগাজীতে স্বেচ্ছাশ্রমে ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্যের বাঁধ নির্মাণ করা হয়। খুঁটি, জিও ব্যাগ, বাঁশ ও বেড়া দিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ বাঁধ নির্মাণ করেন স্থানীয়রা।
উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের তালতলি নামক স্থানে গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করেন তারা। গত ১২ সেপ্টেম্বর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর মধ্যে সেই বাঁধও ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে সহস্রাধিক পরিবার রয়েছে ঝুঁকিতে। মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ায় গ্রামের সহস্রাধিক লোকের পরিবার রক্ষা করতে হলে দ্রুত এ স্থানটিতে একটি টেকসই বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন বলে জানান স্থানীয়রা। বিগত দিনে এ এলাকার শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের পাশাপাশি এ স্থানে যদি দ্রুত বাঁধ নির্মাণ না করে, তাহলে বাকি পরিবারের ঘরবাড়ি অচিরেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে দেওয়া বাঁধে ভাঙন ও অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে এ জনপদের মানুষদের মাঝে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, চরদরবেশ ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে শতাধিক বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ৪০ হাজার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। স্বেচ্ছায় কাজ করেও কূল পাওয়া যাচ্ছে না। মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণ করা ছাড়া কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা শফি উল্যাহ বলেন, ভাঙনরোধে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের বিকল্প নেই। নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাকাতিয়া খালের মুখে মাটি ভরাট হয়ে যাওয়ার পানি অপসারণে বিঘ্ন হচ্ছে। খালটি যদি পরিকল্পিতভাবে খনন করা হয়, তাহলে ভাঙন রোধে সহায়ক হবে।
স্থানীয় ইতালি মার্কেট সমাজের বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, নদী এখান থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে ছিল। বর্তমানে নদী ভাঙার তীব্রতায় এ অঞ্চলের মানুষ রাত হলে একজনও বাড়িঘরে থাকেন না। যদি এখানে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়, তাহলে নদীটি অন্যদিকে প্রবাহিত হবে। বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষা পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর নদীগর্ভে বিলীনের পর শুধু চরদরবেশ ইউনিয়ন নয়, পুরো সোনাগাজী উপজেলার চারপাশে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে উপজেলার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।