![](https://comillanews24.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
ভাইয়ের কিস্তির টাকার জামিনদার হয়ে ৪ মাসের দুধের শিশুসহ বোনকে থানা হাজতে রাত কাটাতে হয়েছে। একই ঘটনায় স্ত্রীর অপরাধে নিরপরাধ স্বামীকেও ৪ ঘণ্টা থানা হাজতে আটক রাখার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তর পাড়ার মোতালেব মিয়ার স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের এনজিওর ঋণের টাকার জিম্মাদার হয়। পরে সেই ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় জিম্মাদার সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় সেই এনজিও। তারই ধারাবাহিকতায় সুমি আক্তারের নামে থানায় ওয়ারেন্ট আসে। গত শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর হোসেন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সুমি আক্তারকে না পেয়ে তার অসুস্থ স্বামী মোতালেব মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে এনে থানা হাজতে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে কোলের দুধের শিশু তোহাকে নিয়ে ৪ ঘণ্টা পর থানায় হাজির হলে স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে সুমি আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
স্বামী মোতালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, যদি কোনো ধরনের অপরাধ করে থাকে সেটি আমার স্ত্রী করেছে। তার অপরাধে তো অসুস্থ অবস্থায় আমাকে ৪ ঘণ্টা থানা হাজতে আটকে রাখতে পারেন না। আমার দুধের শিশু কন্যা তোহা কি অপরাধ করেছে, তাকেও সারারাত থানা হাজতের ভেতরে আটকে রাখা হলো। পুলিশ ইচ্ছে করলে আমার স্ত্রী ও দুধের শিশু কন্যাকে থানায় ভিকটিমদের রুমে রাখতে পারতো। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়িতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। তখন তার স্বামীকে নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় বিষয়টি ওসি সাহেবকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী একটি শিশু সন্তানসহ থানায় আসলে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহমেদ ফয়সাল বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনের সাজা হতে পারে না। যিনি অভিযুক্ত তাকেই পুলিশ ধরতে পারবেন। কোন প্রকার আত্মীয় স্বজনকে পুলিশ গ্রেফতার করা বেআইনি।
মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিল বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানা হাজতের ভিতরে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ থানায় কোন নারী সেল না থাকায় তাদেরকে নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপর দিকে স্বামীকে তুলে এনে চার ঘণ্টা আটকে রাখার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী সুমি আক্তারকে শনিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, যদি এমন ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হয়, তাহলে দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএন/৯০