ফেনী নদী সেতুর সংযোগ সড়কের গর্ত কারনে চলাচল বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

সোনাগাজী(ফেনী)প্রতিনিধি
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ছোট ফেনী নদী ওপর নির্মিত সাহেবের ঘাট সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ সড়ক বন্যার পানির চাপে ভেঙে বড় গর্তটি এক মাসেও ভরাট করা হয়নি। এতে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় দুপারের জনগণের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। গর্তের পাশ দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে প্রতি দিন হাজারো নারী-পুরুষ পারাপার হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভয়াবহ বন্যার পানির চাপে গত ২৫ আগস্ট পশ্চিম অংশে সেতুর নিচ থেকে দুই পাশের মাটি ও ব্লক সরে যায়। এরপর সেতুর সংযোগ সড়কেও ভাঙন দেখা দিতে শুরু করে। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কয়েক হাজার বালুভর্তি বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাও বন্যাপরবর্তী জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে শ্রমিকরা জিও ব্যাগে বালিভর্তি করছেন। শ্রমিক মো. শামিম জানান এর আগে স্থানীয় জননতা স্বেচ্ছাশ্রমে হাজার হাজার বস্তা বালি দিয়েও গর্তটি ভরাট করতে পারেনি। এবার জিও ব্যাগে বলি ভর্তি করে ভরাট করা হবে।

সোনাগাজী উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের সাহেবের ঘাট ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল ছোট ফেনী নদী ওপর ২০১৮ সালে ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ফেনীর মহিপাল এলাকায় যানজট দেখা দিলে চট্টগ্রামগামী নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের যানবাহনগুলো এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করত। এতে ফেনীর মহিপাল এলাকায় যানজট কমে আসে। একই সঙ্গে দুই জেলার যানবাহনের চট্টগ্রাম যেতে দূরত্ব কমে যায়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের জুন মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ৩০ জুন ২০১৮ সাল; কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে জুন ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেতুটিতে ১১টি স্প্যান ও ৫৫টি গার্ডার রয়েছে। ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করেন। চরচান্দিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন খোকন বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে নোয়াখালী ও সোনাগাজীর মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবেও স্থানীয় বাসিন্দারা লাভবান হতে শুরু করেছেন। কিন্তু নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে মাত্র পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। আমি নিজেও বস্তাভর্তি বালি দিতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পেয়েছি। হাজার হাজার বস্তা বালি নদীতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত সেতুটিকে মেরামত করে জনগণের চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানাচ্ছি। ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে বৃহত্তর নোয়াখলী ও ফেনী জেলার মানুষগুলো উপকৃত হয়েছিল। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে বন্যার চাপে সেতুটির সংযোগ সড়কে গর্ত হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত সংস্কার করা হলে সেতুটিও নদী গর্ভে বিলিণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আবু সুফিয়ান বলেন, সেতুর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে বন্যার পানির চাপে সেতুতে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধ কারাসহ সেতুটিকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, বন্যার পানির চাপে সাহেবের ঘাট সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ায় গর্তটি ভরাটের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেনী সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির সংযোগ সড়কের গর্তটি ভরাটের কাজ চলছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Scroll to Top