নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বপ্ন ও চিন্তা চেতনায় ছিল- রাষ্ট্র হবে সকলের, ধর্ম হবে যার যার। কেউ কারো ধর্মে কোন বাঁধা দিতে পারবে না। আমরা সেই নীতিতে বিশ^াস করে আজকে কুমিল্লায় এক সুন্দর পরিবেশ তৈরী করেছি। ঢাকায় বসে ফেসবুকে স্ট্যাস্টার্স দেন, আসেন কুমিল্লায় দেখে যান। একবার পূজায় আমি ছিলাম না, হজে¦ ছিলাম। সেই পূজাতে গন্ডগোল হয়েছে। সেখান থেকে আমার দলীয় সকল নেতাদের সাথে টেলিফোনে নির্দেশনা দিয়েছি। আমার নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের সাথে কাজ করে নিয়ন্ত্রনে দিয়েছি। গন্ডগোল কুমিল্লায় মানুষ মারা যায় চাঁদপুরে , মানুষ মারা যায় নোয়াখালীতে, ভোলাতে। শান্তির কুমিল্লায় আমরা কাউকে মরতে দেইনি। আমি আবারো বলছি, শান্তির কুমিল্লা,সন্ত্রাসমুক্ত কুমিল্লা ,ইভটিজিং মুক্ত কুমিল্লা গড়তে চেয়েছি। কাউকে কুমিল্লার শান্তি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না।
কিছুদিন আগে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক পূজা উদযাপন নিয়ে সভা ডেকেছিল ।আমি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছিলাম, মাদকমুক্ত পূজা করতে চাই। আমি মাদকমুক্ত শুধু পূজা নয়, সেদিন আমি আরও বলেছিলাম, আমি মাদকমুক্ত কুমিল্লা মহানগর করতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই, চাঁদাবাজমুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই। ইভটিজিং মুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই। এসব চাওয়া কি আমার অপরাধ। আজকে কিছু মানুষ আছে যারা হিন্দু সম্পতি দখল করে খেয়েছে, আজকে তারা কুমিল্লার নতুন করে নেমেছে। । তারা আজ আবার নতুন করে চক্রান্তে নেমেছে। তারা নির্বাচন আসলে সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। কোন রকম ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। ৫০ বছরের রাজনীতিতে কুমিল্লায় অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছি। সকল পূজায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেছি। বাবরী মসজিদ নিয়ে যখন গন্ডগোল হয় সেদিন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল না। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলাম, সেদিন কাউন্সিলদেরকে, নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে শিফটিং ডিউটি করে ২৪ ঘন্টা হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিয়েছি। অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেইনি, যারা সেদিন হিন্দুদের মন্দির ভাংতে গিয়েছিল তাদের সন্তানরা আজ ফেসবুকে স্ট্যাটার্স দিচ্ছে।
গতকাল সোমবার রাত ৮ ঘটিকায় কুমিল্লা মহানগর ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাজী বাহার এমপি এসব কথা বলেন।
হাজী বাহার এমপি আরও বলেন, জাতির পিতার যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ^ দরবারে আমাদের ১৬ কোটি মানুষের মাথা উঁচু করে দিয়েছেন। যেখানে বিশে^ও অনেক ধনী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা দাওয়াত পান না সেখাতে আমাদের নেত্রী দাওয়াত পান। বিশে^র সবচেয়ে সাহসী রাষ্ট্রনায়কের নাম শেখ হাসিনা। ১০ বছর আগেও কেউ কল্পনাও করেনি বাংলাদেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, স্যাটেলাইট, এটমিক পাওয়ার প্ল্যান্ট সহ এত উন্নয়ন হবে। কর্ণফুলী নদীর ভিতর দিয়ে আজ সুরঙ্গ বানিয়েছেন যার মধ্য দিয়ে গাড়ী চলবে। ঢাকা বিমান বন্দরে নতুন টার্মিনাল হচেছ যা বিশে^র অনেক দেশেই এত উন্নত টার্মিনাল নেই। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন নতুন ইপিজেড হচ্ছে । এসব উন্নয়ন দেখে আবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা ৭১ সালে আমাদের মাবোনদের পাক বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল তারা দেশে-বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবেনা। নেত্রী ঘোষনা দিয়েছেন ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের আর গরীব মানুষ থাকবে না। শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, একমাত্র শেখ হাসিনার কাছেই প্রিয় মাতৃভূমি নিরাপদ। ৪১ সালের জ্ঞাননির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলকে শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এর ২৬ নং ওয়ার্ডে আরকো চৌমুহনী সংলগ্ন মাঠে মহানগর ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি। ত্রি-বার্ষিক সন্মেলনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কাউন্সিলর আব্দুস সাত্তার কে সভাপতি জহিরুল ইসলাম কে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৯ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। , মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ নুরুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার তাহসিন বাহার সূচনার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন , দপ্তর সম্পাদক শিবু প্রাসাদ রায় , উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য হারুন উর রশীদ । ঝাঁকজমকপূর্ণ উক্ত সম্মেলনে মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন পেশায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সিএন/৯০