চাকুরি শেষ না হতেই বিতর্কিত নেতাকে রাজকীয় সংবর্ধণা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
চাকুরি শেষ না হতেই গাজীউল হক চৌধুরী নামে বিতর্কিত শিক্ষক নেতাকে রাজকীয় সংবর্ধণা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা পরিষদ মাঠে ওই সংবর্ধণা দেয় উপজেলা শিক্ষক সমিতি। অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে কয়েকজন শিক্ষক নেতা স্কুল ফাঁকি দিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা সদরে ব্যস্ত সময় পার করেছন। পাশাপাশি সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠেছে। ছুটির দিনেও সকলের উপস্থিতি নিশ্চিত করায় সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সুত্র জানায়, উপজেলার টনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রিয় শিক্ষক সমিতি একাংশের সাধারণ সম্পাদক গাজীউল হক চৌধুরীর চাকুরি শেষ ১৬ নবেম্বর (বৃহস্পতিবার)। চাকুরি শেষ হওয়ার ৫ দিন আগেই শনিবার তাকে বিদায় সংবর্ধণা দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভুহ্রা জনীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন প্রধান অতিথি ও কেন্দ্রিয় শিক্ষক সমিতি একাংশের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম তোতা বিশেষ অতিথি ছিলেন।

উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আবু কাউছার ভুইয়া ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫জন প্রধান শিক্ষক এবং ৯ জন সহকারী শিক্ষক জানায়, অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ১৮২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এক হাজার এবং বাঙ্গরা ক্লাস্টারের ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দেড় হাজার করে মোট ২০৪টি বিদ্যালয় থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, উক্ত টাকা স্লিপের বরাদ্দ থেকে দেওয়াসহ অনুষ্ঠানে সকল শিক্ষকদের উপস্থিতিও নিশ্চিত করা হয়েছে। গাজীউল হক চৌধুরী চাকুরি জীবনে নিয়মিত স্কুলে যায়নি। স্কুল ফাঁকি দিয়ে বৃত্তি, বদলি ও শ্লিপ বানিজ্যসহ বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, বিভাগ ও রাজধানীতে সাংগঠনিক কাজে প্রায় সময় ব্যস্ত ছিলেন। স্কুলের অভিভাবক দূরের কথা ছাত্র-ছাত্রীরাও অনেকে গাজীউল হক চৌধুরীকে চিনে না। সব সময় ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের সাথে সু-সম্পর্ক রেখে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটিপতি বনে যান তিনি। ফলে সাধারণ শিক্ষকরা তাঁর অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি রেবেকা সুলতানা জানান, সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে বিদায় সংবর্ধণা দেওয়া হয়েছে। কারো কাছ থেকে আমরা কোন প্রকার চাঁদা নেইনি। তবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, আমরা ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের খরচ যোগার করেছি। স্বেচ্ছায় যারা দিয়েছে, তাদের কাছ থেকেই চাঁদা গ্রহণ করা হয়েছে। জোর করে কারো কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়নি।

বিষয়টির ব্যাপারে সংবর্ধণা নিতে প্রস্তুত গাজীউল হক চৌধুরী বলেন, চাকুরিরত অবস্থায় বিদায় সংবর্ধণা নেওয়া যাবে না’ বিষয়টি আমার জানা নেই। রাজকীয় সংবর্ধণার নামে দুই লাখ টাকা চাঁদা তোলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বিষয়টি বলতে পারবে।

মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ বলেন, সংবর্ধণার নামে কে টাকা তুলছে, কারা দিয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, চাকুরিরত অবস্থায় বিদায় সংবর্ধণা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ নেয়, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ।

সিএন/৯০

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০  
Scroll to Top