DW: ২০২২ সালে রাশিয়ার হাতে জার্মানির গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচারের অভিযোগে বিএনডি-র এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ জার্মান বিচারমন্ত্রী আরও সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন৷
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার আঁচ নানা ভাবে যে পশ্চিমা বিশ্বের উপর পড়ছে, সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই৷ ইউরোপ, অ্যামেরিকাসহ একাধিক শক্তি যেভাবে ইউক্রেনের মদত করে চলেছে, মস্কোর কাছে তা মোটেই সুখকর নয়৷ তাই দুই পক্ষের মধ্যে মূল সংঘাতের পাশাপাশি একে অপরের ‘ভেতরের খবর' জানতে বাড়তি আগ্রহও বিস্ময়ের কারণ হতে পারে না৷ এমনই এক দুর্বলতা ধরা পড়লো জার্মানিতে৷
রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জার্মানির আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘বিএনডি'-র এক কর্মীকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ সেই ব্যক্তি চলতি বছর জার্মানির গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য মস্কোর কাছে হস্তান্তর করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ বার্লিনে তাঁর ও অন্য এক ব্যক্তির বাসা এবং দফতরে তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ জার্মানির আইন ও বিচারমন্ত্রী মার্কো বুশমান বলেন, সন্দেহ প্রমাণিত হলে রাশিয়ার গুপ্তচরবৃত্তি বড় ধাক্কা খাবে৷ তিনি এই ঘটনার আলোকে আরও সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন৷ উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে জার্মান সরকার ৪০ জন ব্যক্তিকে রাশিয়ার গুপ্তচর সন্দেহে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছিল৷ কয়েক দিন আগে অস্ট্রিয়াও এক গ্রিক নাগরিকের বিরুদ্ধে রাশিয়ার জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে৷
বিএনডি-র প্রধান ব্রুনো কাল বলেন, গোটা ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে তাঁর সংস্থা তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছে৷ সেইসঙ্গে ভেতরের গোপন তথ্য পাচারের প্রমাণ সন্ধান করতে সার্বিক অভ্যন্তরীণ তদন্তও শুরু হয়েছে৷ তিনি বলেন, অবিলম্বে ফেডারেল কৌঁশলিদের ডাকা হয়েছে৷ তবে তদন্ত চলাকালীন কোনো তথ্য প্রকাশ করা হবে না বলে কার্ল স্পষ্ট জানিয়ে দেন৷ জার্মানিতে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তের সম্পূর্ণ নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয়৷ শুধু জানা গেছে, তাঁর প্রথম নাম কার্স্টেন এবং পদবির প্রথম অক্ষর এল৷ ‘ডেয়ার স্পিগেল’ পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস কয়েক সপ্তাহ আগেই এমন সন্দেহের কথা জানতে পেরেছিলেন৷
প্রশ্ন হচ্ছে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঠিক কোন ধরনের তথ্য রাশিয়ার কাছে পাচার করা হয়েছে? রাশিয়া সম্পর্কে বিএনডি প্রধানের একটি মন্তব্যের মধ্যে একটি ইঙ্গিত নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে৷ রাশিয়ায় জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার চরদের পরিচয় মস্কোর হাতে চলে গেলে তাদের কী হাল হবে, সম্ভবত সে বিষয়ে দুশ্চিন্তার কারণ দেখছেন তিনি৷
২০১৪ সালে শেষবার জার্মান গুপ্তচর সংস্থার কোনো কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ মেনে নিয়েছিলেন৷ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র হাতে গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য তুলে দেবার অভিযোগে ২০১৬ সালে তাঁর আট বছরের কারাদণ্ড হয়৷ সে সময়ে বার্লিন ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কে কিছুটা চিড় ধরেছিল৷