ফেনীতে বন্যায় মানুষ পানিবন্দি, বিদ্যুৎহীন থাকায় বন্ধ ছিল ব্যাংকিং লেনদেন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

জাবেদ হোসাইন মামুন,(ফেনী)প্রতিনিধি
ফেনীতে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি ও বিদ্যুৎহীন রয়েছে। ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফেনী জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ব্যাংক লেনদেন বন্ধ ছিল।

ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকে ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় জেলার সাত লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বন্যাদুর্গত মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। চার উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার কোটি টাকার মৎস্য খামার, পোল্ট্রি খামার ও ডেইরি খামার।

জানা গেছে, বন্যার পানিতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত থেকেই জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে এ তিন উপজেলায় বিদ্যুৎ পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত অবধি বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পরশুরামের সাতকুচিয়া এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি সব ডুবে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে ঠিকভাবে উদ্ধার কাজও করতে পারছেন না। এর মধ্যে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখের বেশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলায় এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।
ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানি কমার আগে সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে স্পিডবোট নিয়ে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বিজিবি সদস্য, কোস্টগার্ড ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের শত শত স্বেচ্ছাসেবক দিনব্যাপী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা কাজ করছে। বন্যার কারণে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কসহ স্থানীয় সব গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন বন্যায় আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারকাজ চলছে। উদ্ধারকৃতদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হচ্ছে।

এদিকে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামি আন্দোলন সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর অংশ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবীরা যানজটের কবলে পড়েছেন। চরমভোগান্তিতে পড়েছেন খাদ্য সহায়তাকারী ও উদ্ধার কারীরা। পানিতে আটকে পড়াদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। বৃহন্পতিবার সকালে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ফেনীতে বন্যা কবলিত এলাকার কিছু অংশ পরিদর্শণ করে খাদ্যসহায়তা প্রদান করেন।

ফেনী শহর সহ সদর উপজেলায় বন্যার পানি বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষদের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বেড়ে গেছে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কেউবা ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে কেউবা ছুটছেন স্বজনদের বাড়িতে। সড়কগুলো ডুবে থাকায় ত্রাণ সহায়তার জন্য এগিয়ে আসা ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা অধিকাংশ নষ্ট হয়ে সড়কে আটকা পড়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Scroll to Top